আর্থিক সাক্ষরতা বলতে আর্থিক ব্যবস্থাপনা, বাজেট, সঞ্চয়, বিনিয়োগ সহ বিভিন্ন আর্থিক বিষয়সমূহ দক্ষতার সাথে অনুধাবন করা এবং কার্যকরভাবে আর্থিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করার সক্ষমতা কে বোঝায়।
এটি একটি ক্রমাগত প্রক্রিয়া যা বুদ্ধিমত্তার সাথে সম্পদ গঠন, ঋণ পরিচালনা এবং নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য টেকসই আর্থিক পরিকল্পনা গ্রহন করতে সাহায্য করে। জনগনের মাঝে আর্থিক পণ্য ও সেবাসমূহের ধারণা প্রদান করা, আর্থিক সচেতনতা সৃষ্টি এবং আর্থিক পণ্য ও সেবাসমূহ ব্যবহারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করাই এই কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য।
একজন মানুষের একটি নির্দিষ্ট সময়ের সামগ্রিক আয়ের উপর ভিত্তি করে উক্ত সময়ের সম্ভাব্য সকল ব্যয় এবং সম্ভাব্য সঞ্চয়ের আগাম হিসাব তৈরি করাকেই আর্থিক পরিকল্পনা বলা হয়। আর্থিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করার সময় বিশেষ ব্যয় যেমন, অসুস্থতা, দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদির জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ বরাদ্দ রাখা উচিৎ। আর্থিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য মূলত আয় বুঝে ব্যয় করা এবং নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য কিছু অর্থ সঞ্চয় করা।
আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রথম ধাপ হল বাজেট তৈরি করা। প্রতি মাসের আয় হতে ব্যয় শুরু করার আগে মাসিক বাজেট তৈরি করা উচিত। বাজেট আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরি করে এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ হ্রাস করে সঠিক আর্থিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতি মাসের শুরুতে খরচের খাত অনুযায়ী বাজেট প্রণয়ন সঞ্চয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ভবিষ্যত নিরাপত্তা, আকস্মিক দুর্ঘটনা মোকাবিলা ও বিভিন্ন লক্ষ্য পূরণে সঞ্চয়ের কোন বিকল্প নেই। সঠিক আর্থিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়ে সঞ্চয়ের জন্য প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা জমা করা খুবই দরকার। সাধারণত সঞ্চয়ের টাকা ঘরে রাখলে টাকা খরচ ও বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই টাকা সঞ্চয়ের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা হলো বাংলাদেশ ব্যাংক এর অনুমোদন প্রাপ্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা সঞ্চয় করলে টাকা সুরক্ষিত থাকবে এবং সময়ের সাথে সাথে নির্ধারিত হারে সুদ বা মুনাফা যোগ হয়ে পরিমাণেও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, প্রয়োজনে যে কোনো সময় তা উত্তোলন করা যাবে।